দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম
আসসালাকু আলাইকুম প্রিয় পাঠক-পাঠিকা আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।দুধ হলো সুষম খাদ্য।দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অনেক পুষ্টিকর উপাদান আর হলুদ হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। এই ২টি উপাদান মিলে গেলেই দূরে থাকবে বহু রোগ আসুন জানা যাক দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা কি ও নিয়ম কি।
ভূমিকা
আমরা অনেকেই প্রতিদিন দুধ খেয়ে থাকি।আর রান্নার কাজে ব্যবহার করি হলুদ । তবে মাথায় রাখা উচিত এক গ্লাস হলুদ মিশ্রিত দুধ আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী হতে পারে।হলুদ হল আয়ুর্বেদের শ্রেষ্ঠ অ্যান্টিবায়োটিক।হলুদ শুধু রান্নাতে তরকারির স্বাদ বাড়ায় না ।এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।প্রাচীন কাল থেকেই হলুদ মিশ্রিত দুধ নানা রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। আসুন জেনে নেই দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা কি কি ।
দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃহলুদে থাকা কারকিউমিন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।দুধে থাকা ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণঃহলুদ দুধ জয়েন্টের ব্যথা, আর্থ্রাইটিস, এবং পেশীর প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
হজমের উন্নতিঃদুধ এবং হলুদ হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং বদহজম ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় উপশম দিতে পারে।
ত্বকের যত্নঃহলুদে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ব্রণ বা ফুসকুড়ি দূর করতে সহায়ক।দুধে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখে।
হাড়ের সুস্থতাঃদুধ ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস হওয়ায় হাড়ের গঠন মজবুত করে এবং অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধে সহায়ক।হলুদ দুধের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণও হাড়ের ব্যথা উপশম করতে পারে।
রক্ত পরিষ্কারকঃহলুদ রক্তকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃহলুদ দুধ মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করতে পারে।
ডায়েবেটিস ভালো করেঃ এক গ্লাস গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে খেলে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এমনকি ডায়েবেটিস যদি প্রথম স্টেপে থাকে তাহলে পুরপুরি নির্মূল করা যায়।
অনেকের ধারণা ডায়েবেটিস একবার হলে আর সারানো যায় না এই ধারণাটি সম্পূণ ভুল কারণ ঘরোয়া উপায়ে এই হলুদ মিশ্রিত দুধ খেলে ডায়েবেটিস সমস্যার পূর্ণ সমাধান করা সম্ভাব।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করেঃহলুদের মধ্যে আছে কারকিউমিন। আর কারকিউমিন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্যান্সার সৃষ্টি কারি কোষ গুলোকে ধ্বংস করে । ক্যান্সার যদি প্রথম সেক্টরে থাকে তাহলে সম্পূরূপে তা ভালো করা সম্ভাব।
কোষের ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করেঃহলুদ মিশ্রিত দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। যা শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে।
ঘুমের সমস্যা দূর করেঃআমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যাদের রাতে পরিমাণ মত ঘুম হয় না। কখন আবার শুইলেই ঘুম আসে আর মধ্যরাতে আর ঘুম আসে না যারা এই সমস্যায় আছেন তারা প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে হলুদ মিশ্রিত দুধ খেয়ে ঘুমালে ঘুম হবে ভালো ও শান্তিময়।
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখেঃ হলুদ মিশ্রিত দুধ হৃৎপিণ্ড পরিষ্কার রাখে এবং রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এর ফলে হৃৎপিণ্ড সুস্থ্য থাকে এবং হৃতরোগের ঝুঁকি কমায়।
সর্দি কাশির সমস্যা দূর করেঃআগেকার দিনে আমাদের দাদি, নানিরা সর্দি ,কাশি হলে হলুদ মিশ্রিত দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিতেন । আর আমরা এখন কি করি সামান্য সর্দি কাশি হলে ডাক্তার কোথায় আছে আর ঔষধ কোথায় আছে সেটা খুঁজি।হলুদ হলো এন্টি ব্যাক্টেরিয়া এবং এন্টি প্রপার্টিজ যুক্ত।
তাই সর্দি কাশি হলেই আমাদের উচিত হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করা এতে কোনো সাইড ইফেক্ট নাই কোন সমস্যা হয়ার সম্ভাবণাও নাই প্রাকৃতিক উপায়ে এসব সমস্যার সমাধাণ করা যার।
জ্বর , মাথা ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যার জন্যও এটি বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
হলুদ মিশ্রিত দুধ খাওয়ার নিয়ম
কোন খাবারি অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না । সবকিছুরি একটা নির্দিষ্ট মাত্রা বা পরিমাণ থাকে যেকোন খাবার যদি পরিমাণ মত খাওয়া হয় তাহলে এর পরির্পূণ পুষ্টি গুণ পাওয়া যায় । যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী হয় । হলুদ দুধ খাওয়ার নিয়ম এবং পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলো:
উপকরণ:
- হলুদ গুঁড়ো - ১/২ চা চামচ
- দুধ - ১ কাপ (গরুর দুধ বা বাদাম দুধ)
- মধু (ঐচ্ছিক) - স্বাদ অনুযায়ী
- আদা গুঁড়ো (ঐচ্ছিক) - ১ চিমটি
- কালো মরিচ গুঁড়ো - ১ চিমটি (হলুদের সক্রিয় উপাদান কুরকুমিন শোষণে সাহায্য করে)
- দারুচিনি গুঁড়ো (ঐচ্ছিক) - ১ চিমটি
প্রস্তুত প্রণালী:
- একটি পাত্রে দুধ গরম করুন।
- এতে হলুদ গুঁড়ো, কালো মরিচ গুঁড়ো, এবং অন্যান্য মশলা যোগ করুন।
- মিশ্রণটি ভালোভাবে নাড়তে থাকুন এবং ফুটে উঠতে দিন।
- ৫-১০ মিনিট চুলায় রেখে মাঝেমধ্যে নাড়ুন।
- দুধ ফুটে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে মধু যোগ করুন।
- একটু ঠাণ্ডা হলে পান করুন।
খাওয়ার নিয়ম:
- সন্ধ্যা বা রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস হলুদ দুধ খাওয়া ভালো।
- দৈনিক একবার পান করা যথেষ্ট।
- যাঁদের দুধে অ্যালার্জি আছে তাঁরা বাদাম দুধ বা অন্য বিকল্প ব্যবহার করতে পারেন।
আপনাদের পছন্দ হতে পারে এমন কিছু পোস্ট
ট্যাগ পোস্ট
#হলুদ দুধ বানানোর নিয়ম
#দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে কি ফর্সা হয়
#দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার অপকারিতা
#হলুদ দুধ খাওয়ার নিয়ম
দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কিত ভিডিও
শেষ মন্তব্য
আসসালামু আলাইকুম আমাদের দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পকিত পোস্টটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে এটা আপনার বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করুন.। তারাও যেন এ বিষয়ে জানতে পারে ও উপকৃত হতে পারে। এবং বিভিন্ন বিষয়ে আরো জানতে ভিজিট করুন nafizit.com এ ওয়েবসাইটে এখানে বিভিন্ন রকমের জ্ঞান মূলক আর্টিকেল লেখা আছে যা পড়ে আপনার বিভিন্ন বিষয় জানতে পারবেন।এবং আপনাদের জ্ঞান-বিধিতে সাহায্য করবে। এবং আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি জানাবেন এ থেকে আমরা সেই ভুলটি সংশোধনের চেষ্টা করব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url