শীতে চুলের খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
বছর গুরে শীত আবার চলে এলো। শীতের আগমন হলেই বেড়ে যায় খুশকির প্রবণতা। শীতকালে চুল পড়া, রুক্ষ খসখসে চুল বিভিন্ন ধরনের স্ক্যাল্প ইনফেকশন সমস্যার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী এ খুশকি। আমরা আজকে এই সমস্যা সমাধান কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।
ভূমিকা
শীতে চুলের খুশকি দূর করার উপায়। শীতকালে চুলের খুশকি একটি সাধারণ সমস্যা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি তেমন বেশি ক্ষতিকর নয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুশকি তেমন একটা ভালো জিনিস না এটা হেফলকে ইঙ্কিস করে। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার তথ্য অনুযায়ী। খুশকি হলো খুশকির কারণে মাথার ত্বকে সাদা রঙের আঁইশ বা চামড়ার পরত ওঠে। এগুলো চামড়ার সাথে কিংবা চুলে থাকে। তবে কালো চুলে খুশকি বেশি দেখা যায়। কিংবা খুশকি যদি মাথা থেকে ঘাড়ের ওপর পরে তাহলে বেশি চোখে পড়ে। খুশকির কারণে মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং অনেক সময় চুলকায়।
খুশকি কেন হয়
ম্যালাসেজিয়া গ্লোবসা নামের এক ধরনের ফাঙ্গাসই খুসকির জন্য মূলত দায়ী। এই ফাঙ্গাস ত্বক এবং চুলে থাকা তেল খেয়ে বেঁচে থাকে। আর এটি করতে গিয়ে অলিক এসিড তৈরি হয়, যা ত্বকে অস্বস্তি তৈরি করে।
আরও পড়ুনঃ শীতকালে শুষ্ক ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়
আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি অ্যাসোসিয়েশন এর তথ্য মতে, অনেক মানুষি মনে করে নোংরা থাকার কারণে খুশকি হয়। কিন্তু সেটা সত্য নয়। তবে নিয়মিত চুল পরিষ্কার না করলে খুশকি হয়ার আশংকা বাড়ে। খুশকি হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে এখনও গবেষণা চলছে।
একি তথ্য দিয়েছে ব্রিটেনের জাতীয় জনস্বাস্থ্য সেবা বিভাগও বলছে, চুল নিয়মিত পরিষ্কার না করলে খুশকি হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে মানসিক চাপ বা ঠান্ড আবওহাওয়া খুশকির চাপ বাড়িয়ে তুলতে পারে। খুশকির ধরন ও লক্ষণ ভেদে এর কারণ ও ভিন্ন হয়ে থেকে।
খুশকি দূর করার উপায়
ব্রিটেনের জাতীয় জনস্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা এন এইচ এস জানাচ্ছেন, খুশকি দূর করতে হলে খুশকি প্রতিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে বিশেষ্য করে যেসব শ্যাম্পুতে -
- জিঙ্ক পাইরিথিওন
- স্যালিসিলিক এসিড
- সেলেনিয়াম সালফাইড
- কিটোকোনাজল কিংবা কোল টার
এই চার উপাদান রয়েছে ওই শ্যাম্পু গুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে শ্যাম্পু কিভাবে ব্যবহার করতে হবে তা জানতে ফ্যামাস্টিসের পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ তুলসী পাতা উপকারি ও অপকারি বৈশিষ্ট্য
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শ্যাম্পুটি ১ মাস ব্যবহার করে দেখা যেতে পারে শ্যাম্পুটি আপনার জন্য মানানসই কি না। তা না হলে একাদিক শ্যাম্পু ব্যবহার করে দেখতে হবে কোনটি আপনার জন্য কার্যকর। খুশকি প্রতিরোধী শ্যাম্পু বা এন্টি ড্যানড্রাগ শ্যাম্পু ব্যবহার করে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পেতে বোতলের গায়ে লেখা নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
যেমন- অনেক শ্যাম্পু ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বলা হয় চার-পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করতে, আবার কোন শ্যাম্পুর ক্ষেত্রে সাথে সাথে ধোয়ে ফেলতে বলা হয়। একটি শ্যাম্পু ব্যবহার করে ভালো ফলাফল না পেলে পরপর শ্যাম্পু পরিবর্তন করতে হবে। যতক্ষণ না উপযোগী একটি শ্যাম্পু না মিলে। এই ছিলো বৈজ্ঞানিক ভাবে খুশকি দূর করার উপায়।
আসুন এবার জেনে নেই ঘরোয়া উপায়ে খুশকি দূর করার উপায় গুলো কি কি
শীতে চুলের খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায়
শীতকালিন ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ায় মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং খুশকির সমস্যা বেড়ে যায়। আসুন জেনে নেই ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে খুশকি দূর করা যায়ঃ
১. নারকেল তেল ও লেবুর রস
অনেকে অনেক সময় জানতে চায় খুশকির প্রতিরোধোক হিসেবে চুলে তেল বা লেবুর রস লাগানো যাবে কিনা । উত্তর হলো অবশ্যই যাবে কারণ , লেবু ভিটামিন সি সমৃধ এবং চুলের জন্য যেকোনো তেলে রয়েছে প্রোটিনের গুণাগুণ যা চুলের জন্য উপকারী এবং খুশকি রোধে সাহায্য করে।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস।
পদ্ধতি: নারকেল তেল হালকা গরম করে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট রেখে দিন, তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
২. অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল একটি প্রাকৃতিক উপাদান। যা ত্বক ও চুলের যত্ন বেশ উপযোগী একটি উপাদান। শীতে চুলের খুশকি দূর করতে অ্যালোভেরা জেল অনেক কার্যকর। কারণ, অ্যালোভেরা জেলে রয়েছে-
ভিটামিন ও মিনারেল: ভিটামিন A, C, E, B12, ও ফলিক অ্যাসিড।ভিটামিন A, C, E: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা চুলের ক্ষতি রোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক।
এনজাইম ও অ্যামিনো অ্যাসিডঃ প্রোটোলাইটিক এনজাইম ও ২০টির বেশি অ্যামিনো অ্যাসিড।প্রোটোলাইটিক এনজাইম মৃত ত্বক কোষ অপসারণ করে, যা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। অ্যামিনো অ্যাসিড চুলের প্রোটিন তৈরি করে এবং চুলকে মজবুত করে।
স্যালিসাইলিক অ্যাসিডঃ অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রভাব থাকে, যা মাথার ত্বকের ইনফেকশন কমায়। খুশকি দূর করে এবং চুলকানি কমায়।
পদ্ধতি: সরাসরি মাথার ত্বকে অ্যালোভেরা জেল ম্যাসাজ করুন এবং ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা: অ্যালোভেরা জেল মাথার ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং খুশকি কমাতে সহায়ক।
আরও পড়ুনঃ সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের
৩. মেথি বীজের প্যাক
মেথি বীজ (Fenugreek Seeds) চুলের জন্য একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকর উপাদান, যা চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করা যায়।
কারণ, মেথিতে আছে- প্রোটিন, লেসিথিন, ভিটামিন C, নিয়াসিন (Vitamin B3), আয়রন ও পটাশিয়াম, ফাইবার ও স্যাপোনিনস, অ্যান্টি-ফাংগাল ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা চুলের খুশকি সহ নানা সমস্যা দূর করে সাহায্য করে।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ মেথি বীজ, ১ কাপ পানি।
পদ্ধতি: মেথি বীজ সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ব্লেন্ড করে পেস্ট বানিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা: মেথি বীজ অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাংগাল, যা খুশকি দূর করে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন কিছু পোস্ট
শেষ মন্তব্য
আসসালামু আলাইকুম আমাদের শীতে চুলের খুশকি দূর করার উপায় সম্পকিত পোস্টটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে এটা আপনার বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করুন.। তারাও যেন এ বিষয়ে জানতে পারে ও উপকৃত হতে পারে। এবং বিভিন্ন বিষয়ে আরো জানতে ভিজিট করুন nafizit.com এ ওয়েবসাইটে এখানে বিভিন্ন রকমের জ্ঞান মূলক আর্টিকেল লেখা আছে যা পড়ে আপনার বিভিন্ন বিষয় জানতে পারবেন।এবং আপনাদের জ্ঞান-বিধিতে সাহায্য করবে। এবং আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি জানাবেন এ থেকে আমরা সেই ভুলটি সংশোধনের চেষ্টা করব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url