অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
NID Card এর তথ্যে কোন প্রকার ভুল থাকলে তা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার মাধ্যমে সঠিক করে নেয়া যায়। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম জানা খুবই প্রয়োজন। জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন করার সময় ভুল তথ্য প্রদানের কারনে অথবা অপারেটরের ভুল টাইপিং করার ফলে আইডি কার্ডে ভুল চলে আসে।
ভূমিকা
জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড যা একজন মানুষের পরিচয় বহন করে। আপনি কোন দেশে বসবাস করে বা কোন দেশের নাগরিক তা নিধারণ করে আপনার NID Cade বা জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড যে নামই বলেন না কেন জিনিস কিন্তু একটাই আর এই NID Cade এ যদি কোন ভুলত্রুটি থাকে তাহলে নানা বিদ সমস্যার সমূখীন হতে হবে তাই সময় থাকতে কিভাবে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করবেন তা নিয়ে থাকছে বিস্তারিত আলোচনা অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
আজকের আলোচনার বিষয়
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
- অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কতদিন লাগে
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করার নিয়ম
- ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন
- ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন
- ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা সংশোধন
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন সম্পকিত প্রশ্ন ও উওর ইত্যাদি
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আপনাকে প্রথমে এনআইডি ওয়েবসাইটে আপনার NID Number, জন্ম তারিখ এবং একটি সিকিউরিটি ক্যাপচা পূরণ করে অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। তারপর ফেস ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট লগইন করুন। আপনার প্রোফাইলের এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য পরিবর্তন করে আবেদন জমা দিন।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে শিক্ষাগত যোজ্ঞতার সনদ, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা সংশোধন করতে নাগরিক সনদ, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, বিদ্যুৎ বিলের কপি, জমির খারিজ/পর্চার কপি লাগে।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
নাম সংশোধনের জন্য বোর্ড পরীক্ষার সনদ, পিতা/মাতার ভোটার আইডি কার্ড এর কপি সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ লাগে। ঠিকানা বা ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে ইউটিলিটি বিলের কাগজ ও বসবাসের তথ্য প্রয়োজন। এনআইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন আনুমোদন পেলে অনলাইন থেকে NID Cade Download করে সেটি ব্যবহার করতে পারবেন।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয় সাধারণ নাগরিক চারটি (০৪) ক্যাটাগরি তে তাদের নিজস্ব ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে পারবেন। ক্যাটাগরি চারটি হচ্ছেঃ
- রক্তের গ্রুপ সংশোধন
- নাম সংশোধন (নিজের কিংবা পিতা মাতার)
- ঠিকানা সংশোধন
- জন্ম তারিখ সংশোধন
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
আইডি কার্ড সংশোধন আবেদনের জন্য ২০০ টাকা সাথে ৩০ টাকা ভেট সহ মোট ২৩০টাকা ফি দিতে হয়।দ্বিতীয়বার আবেদনে ৩০০ টাকা তার সাথে ১৫% ভেট সহ ৩৪৫ টাকা এবং পরবর্তী যতবার আবেদন করবেন ভেট সহ ৫৭৫ টাকা ফি প্রয়োজন হবে।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের তিনটি ধরণ রয়েছে। এই ক্যাটাগরি অনুসারে সংশোধন ফি আলাদা আলাদা হয়ে থাকে।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
- মৌলিক তথ্য সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য সংশোধন
- ঠিকানা পরিবর্তন
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে সর্বোচ্চ ৭ দিন থেকে ৪৫ দিন সময় লাগতে পারে। ”ক” ক্যাটাগরির সংশোধনী আবেদন ৭ দিন, ”খ” ক্যাটাগরির সংশোধনী আবেদন ১৫ দিন, “গ” ক্যাটাগরির সংশোধনী আবেদন ৩০ দিন এবং “ঘ” ক্যাটাগরির সংশোধনী আবেদন ৪৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়।
এখানে দিন বলতে কার্য দিবস বোঝানো হয়েছে। যদিও অফিসিয়াল ভাবে নির্বাচন অফিস থেকে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনী সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এরপরেও ৩/৪ দিন আগ-পিছ হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করার নিয়ম
স্মার্ট কার্ড সংশোধন করার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে আপনার স্মার্ট কার্ড নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। ফেইস ভেরিফিকেশন করে লগইন করুন। এবার প্রোফাইল অপশনে যান এবং এডিট লিংকে ক্লিক করে তথ্য সংশোধন করুন। সংশোধন ফি পরিশোধ ও প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড করে আবেদন জমা দিন।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন
এটি একটি সাধারণ ভুল। অনেকের জন্ম নিবন্ধন এর সাথে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখের মিল খুজে পাওয়া যায় না। এছাড়াও সার্টিফিকেট এর সাথেও এনআইডি কার্ড এর জন্ম তারিখের অমিল লক্ষ করা যায়। এই ঝামেলা এড়াতে আজই আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি সংশোধন করে ফেলুন। যে সমস্ত কাগজপত্র লাগবে তা হলঃ
- সার্টিফিকেট এর স্কান কপি
- পাসপোর্ট
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- ভাইবোন এর এনআইডি( যদি থাকে)
- অনলাইন জন্ম সনদ (১৭ সংখ্যা বিশিষ্ট)
- পারিবারিক সনদ পত্রের সত্যায়িত কপি
- বয়স প্রমানের রিপোর্ট
- সার্ভিস বই কিংবা MPO sheet এর কপি, চাকরি করলে চাকরির আইডি কার্ড এর কপি
এক্ষেত্রে আবেদন এর প্রার্থীর বয়স ১দিন – ৩ বছরের মধ্যে হলে “ক” ক্যাটাগরিতে, ৩ – ৫ বছর হলে “খ” ক্যাটাগরিতে পরবে। একই ভাবে ৫ থেকে ১০ বছর বয়সের প্রার্থীরা “গ” ক্যাটাগরির আন্ডারে আবেদন করবেন এবং ১০ বছরের উদ্ধে সকল বাংলাদেশী নাগরিক “ঘ” ক্যাটাগরির আওতায় পড়বে।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন
আমাদের অনেকের ভোটার আইডি কার্ড এর নাম এর সাথে সার্টিফিকেট কিংবা জন্ম সনদের নামের মিল থাকে না। ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বিশেষ করে জমিজমা রেজিস্ট্রেশনে এবং পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যু করনে। তাই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। এটি “গ” (যদি প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দেয়া হয়) এবং “ঘ” (প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে অক্ষম হলে) ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ হলঃ
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
- পাসপোর্ট
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- অনলাইন জন্ম সনদ (১৭ সংখ্যার)
- সন্তানের ভোটার আইডি কার্ড
- সন্তানের সার্টিফিকেট
- এমপিও/সার্ভিস বইয়ের কপি এবং
- উপজেলা নির্বাচন অফিসার এর প্রতিবেদন কপি ইত্যাদি।
ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা সংশোধন
ঠিকানা সাধারনত পিছনের অংশে থাকে, তাই আমরা এটিকে গুরুত্ব সহকারে পরিবর্তন কিংবা সংশোধন করতে আগ্রহী প্রকাশ করি না। তবে জেনে রাখা ভাল এটি জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
উদাহরণস্বরূপ যদি বলি, আপনাদের অনেকেরই বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ফোন থেকে এনআইডি কার্ড এর সামনের ও পিছনের পার্টের ছবি জমা দিতে বলা হয়। তখন যদি আপনার দেওয়া সার্টিফিকেট কিংবা অন্য ডকুমেন্ট এর তথ্যের সাথে মিল না থাকে তাহলে আপনার ভেরিফিকেশন ফেইল আসতে পারে। যার কারনে আপনি উক্ত প্রোগ্রামটি এক্সেস করতে পারবেন না। তাই আমাদের সকলের জানা উচিত কিভাবে ঠিকানা সংশোধন করা যায় এবং ঠিকানা সংশোধন করতে কি কি কাগজ পত্র লাগে।
- বাসার ইউটিলিটি বিলের কপি ( গ্যাস/ বিদ্যুৎ/ পানি)
- বাসার ট্যাক্স রশিদ কিংবা গ্রামের ক্ষেত্রে জমির খাজনা আদায়ের দাখিলা
- প্রত্যয়ন পত্র।
- ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন সনদ এর কপি ইত্যাদি।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন সম্পকিত প্রশ্ন ও উওর
প্রশ্ন: কার্ডের তথ্য কিভাবে সংশোধন করা যায়?
উত্তর: এনআইডি রেজিস্ট্রেশন উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিসে ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। সংশোধনের পক্ষে পর্যাপ্ত উপযুক্ত দলিলাদি আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
প্রশ্ন: আমি অবিবাহিত। আমার কার্ডে বাবা না লিখে স্বামী লেখা হয়েছে। কীভাবে তা সংশোধন করা যাবে?
উত্তর: সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিসে আপনি বিবাহিত নন মর্মে প্রমাণাদিসহ আবেদন করতে হবে।
প্রশ্ন: বিয়ের পর স্বামীর নাম সংযোজনের প্রক্রিয়া কি?
উত্তর: নিকাহনামা ও স্বামীর আইডি কার্ড এর ফটোকপি সংযুক্ত করে NID Registration Wing/ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ থানা/ জেলা নির্বাচন অফিস বরাবর আবেদন করতে হবে।অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
প্রশ্ন: বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এখন ID Card থেকে স্বামীর নাম বিভাবে বাদ দিতে হবে?
উত্তর: বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত দলিল (তালাকনামা) সংযুক্ত করে NID Registration Wing/সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ থানা/ জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে।
শেষ মন্তব্য
আসসালামু আলাইকুম আমাদের অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪ সম্পকিত পোস্টটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে এটা আপনার বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করুন.। তারাও যেন এ বিষয়ে জানতে পারে ও উপকৃত হতে পারে। এবং বিভিন্ন বিষয়ে আরো জানতে ভিজিট করুন nafizit.com এ ওয়েবসাইটে এখানে বিভিন্ন রকমের জ্ঞান মূলক আর্টিকেল লেখা আছে যা পড়ে আপনার বিভিন্ন বিষয় জানতে পারবেন।এবং আপনাদের জ্ঞান-বিধিতে সাহায্য করবে। এবং আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি জানাবেন এ থেকে আমরা সেই ভুলটি সংশোধনের চেষ্টা করব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url