সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের



চা বাগান, জাফলং, রাতারগুল জলাবন, হাকালুকি হাওর, লালাখাল, ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, তামাবিল, পাহাড়, ঝর্ণা সব মিলিয়ে নানা বৈচিত্রের সম্ভার এই সিলেট দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই প্রাচীন জনপদ বনজ, খনিজ ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত ।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

ভূমিকা

আমাদের পর্যটকদের কাছে সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো খুব প্রিয়। সিলেটে দর্শনীয় স্থান এর কোন কমতি নেই। তাই একটু সময় পেলে আমরা বাইকাররা সিলেটে ছুটে যেতে চায়। আজ আমরা সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে ৭টি দর্শনীয় স্থান যেমন ১। ডিবির হাওরঃ ( dibir haor sylhet ) ২। লালাখালঃ ( lala khal sylhet )৩। বিছনাকান্দিঃ ( bisnakandi ) ৪। জাফলংঃ ( jaflong ) ৫। হাকালুকি হাওরঃ ( hakaluki haor )৬।তামাবিলঃ ( tamabil sylhet )৭। পান্থুমাই ঝর্ণাঃ ( panthumai )ইত্যাদি স্থান সম্পকে বিস্তারিত ও কিভাবে যাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দযের কথা বলে শেষ করার মত না । সবুজ শ্যামলী সৌন্দযের লিলাভূমি আমাদের এই প্রাণের সিলেট । সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দয পযটকদের আকর্ষণ বারবার । এটি বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত একটি শহর। এটি সুফি মাজারগুলির জন্য পরিচিত, যেমন 14 শতকের সাধক হযরত শাহ জালালের অলঙ্কৃত সমাধি এবং মসজিদ, যা এখন দরগাহ গেটের কাছে একটি প্রধান তীর্থস্থান। রাজাদের ক্ষুদ্র জাদুঘরে স্থানীয় লোককবি হাসন রাজার জিনিসপত্র রয়েছে। 17 শতকের শাহী ঈদগাহে একটি 3-গম্বুজ বিশিষ্ট গেটওয়ে দাঁড়িয়ে আছে, সম্রাট আওরঙ্গজেব দ্বারা নির্মিত একটি বিশাল খোলা আকাশের পাহাড়ের চূড়া মসজিদ।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

১। ডিবির হাওরঃ ( dibir haor sylhet )



সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি মেঘালয়ের পাদদেশে ঝর্ণা বেষ্টিত ডিবির হাওর লাল শাপলার বিল নামে পরিচিত। আমাদের জাতীয় ফুল লাল শাপলার বিল ডিবির হাওর। প্রতিবছর অসংখ্য পাখি আসে এই ডিবির হাওরে। ভোরের লাল শাপলা,পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য্যে, সাথে পাখির কিচির মিচির এ যেন আসলেই এক প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

কিভাবে ডিবির হাওর যাওয়া যায়

ডিবির হাওরে যেতে সবার প্রথমে আপনাকে চলে আসতে হবে সিলেট নগরীতে। সেখান থেকে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে জাফলং এর দিকে। জৈন্তাপুর বাজার রাস্তার বিজিবি ক্যাম্প লিখা সাইনবোর্ডের ডান পাশের রাস্তা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট এগিয়ে গেলে পেয়ে যাবেন ডিবির হাওর । আপনি যদি এই শাপলার বিলের অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই খুব ভোরে যেতে হবে।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

২।লালাখালঃ ( lala khal sylhet )



মেঘালয় পর্বত শ্রেনীর সবচেয়ে পুর্বের অংশ জৈন্তিয়া হিলসের ঠিক নীচে পাহাড়, প্রাকৃতিক বন, চা বাগান ও নদীঘেরা একটি গ্রাম লালাখাল, সিলেট জেলার জৈন্তিয়াপুর উপজেলায় অবস্থিত। লালাখাল থেকে সারীঘাট পর্যন্ত নদীর ১২ কি.মি পানির রঙ পান্না সবুজ হয়ে থাকে।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

পুরো শীতকাল এবং অন্যান্য সময় বৃষ্টি না হলে এই রঙ থাকে। জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে আসা প্রবাহমান পানির সাথে মিশে থাকা খনিজ এবং কাদার পরিবর্তে নদীর বালুময় তলদেশের কারনেই এই নদীর পানির রঙ এরকম দেখায়। এডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকরা এখানে রাত্রিযাপন করতে পারেন।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

কিভাবে লালা খাল যাওয়া যায়?

সারী ব্রীজ় পেরিয়ে একটু সামনেই রাস্তার মাঝখানে একটি পুরনো স্থাপনা। এর পাশ দিয়ে হাতের ডানের রাস্তায় ঢুকে ৭ কি.মি গেলে লালাখাল।

৩।বিছনাকান্দিঃ ( bisnakandi )

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বিছনাকান্দি। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে খাসিয়া পাহাড়ের অনেকগুলো ধাপ দুই পাশ থেকে এক বিন্দুতে এসে মিলেছে। পাহাড়ের খাঁজে রয়েছে সুউচ্চ ঝর্ণা।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

এই স্পটের মূল আকর্ষণ হলো পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা পানি প্রবাহ। পূর্ব দিক থেকে পিয়াইন নদীর একটি শাখা পাহাড়ের নীচ দিয়ে চলে গেছে ভোলাগঞ্জের দিকে। পাহাড়, নদী, ঝর্ণা আর পাথরের এক সম্মিলিত ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই বিছনাকান্দি।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়: বর্ষায় বিছনাকান্দি ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

কিভাবে বিছনাকান্দি যাওয়া যায়?

সিলেট থেকে কোম্পানীগঞ্জ রোডে সালুটিকর, সালুটিকর থেকে এগিয়ে ডানে মোড় নিয়ে বঙ্গবীর। বঙ্গবীর থেকে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বামে মোড় নিয়ে হাদারপাড় বাজার। হাদারপাড় বিছনাকান্দির একেবারে পাশে ।

৪।জাফলংঃ ( jaflong )



জাফলং প্রকৃতির কন্যা হিসাবে আমাদের সবার কাছে পরিচিত। সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে জাফলং আমার অনেক পছন্দের। সিলেট এর গোয়াইনঘাট উপজেলার ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা এই জাফলং।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

সিলেট থেকে জাফলং এর দুরত্ব মাত্র ৬২ কিলোমিটার। পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ পানির, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, উঁচু উঁচু পাহাড়ে সাদা মেঘের খেলা জাফলংকে করেছে সবার কাছে প্রিয়। একেক ঋতুতে জাফলং একেক রকম রুপের প্রকাশ করে।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

কিভাবে জাফলং যাওয়া যায়?

জাফলং যেতে হলে আপনাকে আসতে হবে সিলেটে। ঢাকা থেকে সিলেট এর দূরত্ব ২৪০কিলোমিটার। সিলেট পৌঁছাতে সাধারণত লাগে ৬ ঘন্টার মত। সিলেটে থেকে আপনি চলে আসতে পারবেন জাফলং।

৫।হাকালুকি হাওরঃ ( hakaluki haor )



হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের বৃহত্তর হাওর। এটি মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলায় অবস্থিত। হাকালুকি হাওরের আয়তন ১৮১.১৫ বর্গ কিমি। হাওরটি ৫টি উপজেলা ও ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে বিস্তৃত। হাকালুকি হাওরে প্রায় ২৩৮টি বিল রয়েছে। হাকালুকি হাওরে প্রচুর পরিমাণ মৎস্য সম্পদ রয়েছে। হাওরের বিলগুলি অনেক প্রজাতির দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক আবাস। হাকালুকি হাওরের বিলগুলিতে বিভিন্ন জাতের বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

কিভাবে হাকালুকি হাওর যাওয়া যায়?

 হাকালুকি হাওর যেতে আপনাকে সবার প্রথমে ফেঞ্চুগঞ্জ সদর যেতে হবে। ফেঞ্চুগঞ্জ সদর থেকে ঘিলাছড়া জিরোপয়েন্ট যেতে হবে। সদর থেকে দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়: 

এপ্রিল-অক্টোবর পর্যন্ত এই হাওরে ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।

৬।তামাবিলঃ ( tamabil sylhet )

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত এক স্থানের নাম তামাবিল (Tamabil)। সিলেট-জাফলং রোড ধরে এগিয়ে যেতে থাকলে জাফলংয়ের ৫ কিলোমিটার পুর্বে তামাবিলের দেখা মিলবে।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

সিলেট জেলা থেকে তামাবিলের দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। তামাবিল মূলত বাংলাদেশের সিলেট এবং ভারতের শিলং মধ্যকার সীমান্ত সড়কের একটি বর্ডার। তামাবিল থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়, ঝর্ণা সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখা যায়।

কিভাবে তামাবিল যাওয়া যায়ঃ 

তামাবিল যেতে চাইলে প্রথমে চায়ের দেশ সিলেটে আসতে হবে। সিলেট থেকে জাফলং রোড ধরে এগিয়ে গেলে আপনি পেয়ে যাবেন তামাবিল।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

৭। পান্থুমাই ঝর্ণাঃ ( panthumai )



পান্থুমাই ঝর্ণা বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অবস্থিত মেঘালয় পাহাড়ের কোল ঘেঁষা একটি অপূর্ব গ্রামের নাম। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের এই গ্রাম বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

মেঘালয় পাহাড় আর পিয়াইন নদীর পাড়ে অবস্থিত এই গ্রামে আছে অপরূপ নিদর্শন পান্থুমাই ঝর্ণা। কেউ একে বলেন ফাটাছড়ির ঝর্ণা আবার কেউ আবার ডাকেন বড়হিল ঝর্ণা। এই ঝর্ণার মূল অবস্থান ভারতে হওয়া পরও ১০০ টাকায় ছোট ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া করে ঝর্ণার বেশ কাছে যাওয়া যায়।সিলেটের দর্শনীয় ৭টি স্থান সমূহের  

পান্থুমাই ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময় :

 বর্ষাকাল ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়,কারন তখন চারদিকে প্রচুর পানি থাকে।

শেষ মন্তব্য

আসসালামু আলাইকুম আমাদের পোস্টটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে এটা আপনার বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করুন.। তারাও যেন এ বিষয়ে জানতে পারে ও উপকৃত হতে পারে। এবং বিভিন্ন বিষয়ে আরো জানতে ভিজিট করুন nafizit.com এ ওয়েবসাইটে এখানে বিভিন্ন রকমের জ্ঞান মূলক আর্টিকেল লেখা আছে যা পড়ে আপনার বিভিন্ন বিষয় জানতে পারবেন।এবং আপনাদের জ্ঞান-বিধিতে সাহায্য করবে। এবং আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি জানাবেন এ থেকে আমরা সেই ভুলটি সংশোধনের চেষ্টা করব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url