ড্রাগন ফলের গাছ চাষ পদ্ধতি

আমাদের বাংলাদেশের বাণিজ্যিকভাবে সফলভাবে চাষ করা জন্য বউ ড্রাগন ফল ১ ( সাদা)  ও বউ ড্রাগন ফল ২(লাল) বাণিজ্যিকভাবে সফলভাবে চাষ করা যায় ।  এছাড়া লালচে ড্রাগন ও হলুদ ড্রাগন ফল চাষাবাদ করা যেতে পারে।দেশের সব ধরনের নার্সারিতে অথবা হার্টিকালচার সেন্টারে সব ধরনের ড্রাগন ফলের চারা পাওয়া যায়।বীজ দিয়ে চারা তৈরি করা গেলেও কাটিং এর মাধ্যমে শাখা কলমের চারা তৈরি করা সবচেয়ে বেশি  উত্তম ।


ড্রাগন ফল একটি ক্যাকটাস প্রজাতির বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ ।পৃথিবীর প্রায় অনেক দেশে ড্রাগন ফল উৎপাদন ছাড়াও শোভা জন্য উদ্ভিদ হিসেবে ড্রাগন ফল চাষ করা হয়। ড্রাগন ফলের দাম বেশি হওয়ায়  এই ফলের চাষাবাদ অত্যন্ত জনক ।  এটি মূলত পাকা ফল ও সর্বোচ্চ হিসেবে খাওয়া যায়।এই ফল থেকে জেলি জুস আইসক্রিম বিভিন্ন ধরনের চকলেট তৈরি করা হয় ।  আবার এই ফল মানবদেহে রক্ত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ।

 ভূমিকা ঃ

ড্রাগন আমাদের দেশে একটি নতুন বিদেশি । ফল ড্রাগন ফলের বৈজ্ঞানিক নাম হল hylocereus sp.  জাতীয় উদ্ভিদ ।  বর্তমানে আমেরিকা বাংলাদেশ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ চাষাবাদ করা হচ্ছে এই ফল ।  ফলীতে রয়েছে ভিটামিন সি আয়রন অ্যান্টিঅক্সাইড । এটি আমাদের  শরীরের ডায়াবেটিস ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের জন্য উপকারী ।  

এখানে  ড্রাগন ফলের গাছ কিভাবে চাষ করতে হয়,  ড্রাগন ফলে কতটুকু পুষ্টি রয়েছে,  মাটি,  জাত , অমৌসম উৎপাদন, বংশবিস্তার ,জমিনির্বাচন তৈরি ও পরিচর্য্‌ রোপন , পদ্ধতির সময, মাদা তৈরি , চারা রোপনা , পরিচর্যা,  এসকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে ।

 উৎপত্তি ও বিস্তার ঃ

ড্রাগন ফল মূলত দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে জন্ম নেয়।ভিয়েতনাম থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে ড্রাগন ফলের বীজ নিয়ে আসা হয় ।এরপর থেকে ধীরে ধীরে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়। বর্তমান সময়ের ভিয়েতনামের ফল ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে।  ভিয়েতনাম ছাড়া বিভিন্ন দেশে ফলে চাষ হয়ে থাকে 

 উদ্ভিদ  ও গাছের বর্ণনা ঃ

ড্রাগন ফলের গাছ দ্রুত বাড়ে। এটি একটি লতা জাতীয়  উদ্ভিদ ।  কাণ্ড মাংসল ,  লতানো শাখা প্রশাখা সমৃদ্ধ সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে । শিরাযুক্ত এবং প্রতিটি শিরার প্রান্ত ও অসমান ঢেউ থাকে । প্রতিটি গাছের প্রায় শিরার প্রান্তে০.৫০  থেকে১.০০  সেমি. পরপর ছোট ছোট   খাজ থাকে  এবং প্রতিটি খাজে  কাটা থাকে।  ড্রাগন ফল গাছের মূলত কোন পাতা নেই  ।কান্ডের মাধ্যমে এরা খাদ্য গ্রহণ করে।

 ড্রাগন ফল গাছ রাতে বাতাস হতে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে এবং দিনে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া খাদ্য উৎপাদন করে ।এই গাছ প্রায় ১.৫  থেকে ৩.৫  মিটার পর্যন্ত লম্বা হয় ।  কান্ড থেকেই ড্রাগন ফলের মূল বের হয়। ড্রাগন ফল গাছ দেখতে অনেক সুন্দর হয় ড্রাগন ফল গাছের সাদা সাদা ফুল ফোটে হালকা হলুদ রং ও থাকে।  

ফুল থেকে মূলত ডিম্বাকার ফল গঠিত হয় ড্রাগন ফল গাছ । ড্রাগন ফলের একেকটির ওজন ১৫০  থেকে ১২০০  গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে ।  ড্রাগন ফলের পাকা শাঁস অনেক নরম হয় ড্রাগন ফলে কালোজিরার মত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কালো রঙের অসংখ্য বিষ দেখা যায় । 

ড্রাগন ফল হালকা মিষ্টি এবং স্বল্প ক্যালরিযুক্ত হয়ে থাকে।  ড্রাগন ফল মূলত দুই ধরনের টকশাদের।  ড্রাগন ফলের আবার তিনটি প্রজাতি রয়েছে  লাল সাদা এবং হলুদ  খোসা বিশিষ্ট । 

 ড্রাগন চাষে আবহাওয়া ও জলবায়ু  কেমন  অঞ্চল থাকবেঃ

ড্রাগন ফল মূলত মেরু অঞ্চলের নয়।  এটি পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত আবহাওয়া সমৃদ্ধির মধ্যে টিকে থাকে।  তাই স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য বাৎসরিক ৫০০-১৫০০  মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন  ড্রাগন ফল গাছের জন্য।  তবে অতি বৃষ্টির জন্য ড্রাগন ফল গাছের ফুল ঝরা ও ফলের পচন দেখা দিতে পারে । 

বৃষ্টিপাতের কারণে ড্রাগন ফল গাছের গোড়া জলভদ্রতা দেখা দিলে শিকড় ও গোড়া পৌঁছে যেতে দেখা যায়। ড্রাগন ফল গাছের জন্য প্রচুর আলোর প্রয়োজন হয়  সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭০০  মিটার রাই দাগন ফল চাষ করা যায় ।  তবে ড্রাগন ফল উষ্ণ ও আগ্রহ জলবায়ুতে ভালো চাষ করা যায় । 

 মাটি ঃ 

বেলে থেকে এটেল প্রায় সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন ফল চাষ করা গেলেও গভীর উচ্চ জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দু আস থেকে বেলে  দু আস  মাটিতে গাছের বৃদ্ধি ও বিকাশ ভালো হয়। ড্রাগন ফল গাছ মোটেও জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না বিধায় পানি জমে না এমন উঁচু জমিতে এর ফলটি চাষ করা উচিত ।

 বাংলাদেশের জন্য জাত ঃ

আমাদের দেশ বাংলাদেশ আবহাওয়া ও মাটি ড্রাগন ফল চাষের জন্য  উপযোগী হওয়ায়  বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট  গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেয় ২০১৪ সালে এতে তারা ড্রাগন ফলের জাত বারি ড্রাগন ফল -১  নামে ড্রাগন ফলের একটি উন্নত জাত মুক্ত করে। তাই আমাদের দেশের জন্য উপযুক্ত জাত হচ্ছে বারি  ড্রাগন ফল ১ 

রোপনের পদ্ধতি:

ড্রাগন ফল চাষের সবচেয়ে উপযোগী জায়গা হল সমতল ভূমি বড়বাজার এবং পাহাড়ি জমিতে কোন পদ্ধতিতে ড্রাগন ফল চাষ করা হয় । 

মাদা  তৈরি ঃ

জমির উপায় দিকে ২.৫ হতে ৩.৫  মিটার দূরত্বে ২.৬  মিটার লম্বা সিমেন্টের খুঁটি খুঁজতে হবে যাতে করে মাটির উপরে ১.৫- ১.৭২   মিটার অবশিষ্ট থাকে ।  প্রতিটি ক্ষতির ৩০ সেন্টিমিটার দূরত্বে  ৬৫*৬৫*৬৫ ঔ সেন্টিমিটার গর্ত করে খোলা রাখতে হবে । 

এই গর্ত তৈরির ২০ থেকে ২৫ দিন পর এই প্রতি গর্তের ২০ থেকে ২৫ কেজি পচা গোবর , ২৫০ গ্রাম টিএসপি একশ গ্রাম ২৫০ গ্রাম এমওপি ও ১৫ গ্রাম ড্রিঙ্ক সালফেট ও ২৫ গ্রাম বরেক এসি ড সারপতি গর্তের ভিতর মাটির সাথে ভালোভাবে মিশাতে হবে।  মেশানোর পর প্রতিটি গর্ত ভরাট করে দিতে হবে  ভালোভাবে ।  

চারা রোপন ও পরিচর্যা ঃ

সার দেওয়া গর্ত ভরাট করার  ১০ থেকে ১৫ দিন পর  প্রতিটি  খুঁটির চারপাশে একটি চারা সোজাভাবে লাগাতে হবে ।  এবং  চারিদিকে মাটি হাত দিয়ে চেপে দিতে হবে। রোপণ   পরপর পানি   শেচ দিতে হবে । ড্রাগন ফল গাছ প্রায় ৩.৫  লম্বা হয়  তাই সিমেন্টের খুবই প্রয়োজন হবে সাপোর্টের জন্য ।

শেষ মন্তব্য

আসসালামু আলাইকুম আমাদের পোস্টটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে এটা আপনার বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করুন.। তারাও যেন এ বিষয়ে  জানতে পারে ও উপকৃত হতে পারে। এবং  বিভিন্ন বিষয়ে আরো জানতে ভিজিট করুন www.nafizit.com  এ ওয়েবসাইটে এখানে বিভিন্ন রকমের জ্ঞান মূলক আর্টিকেল লেখা আছে যা পড়ে আপনার  বিভিন্ন বিষয় জানতে পারবেন।

এবং আপনাদের জ্ঞান-বিধিতে সাহায্য করবে। এবং আমাদের  আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি জানাবেন এ থেকে আমরা সেই  ভুলটি সংশোধনের চেষ্টা করব। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url